ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় রিমাল। এরই মধ্যে এর অগ্রভাগ উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে শুরু করেছে। এর ফলে দেশের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টিসহ ঝোড়োহাওয়া বয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে জলোচ্ছ্বাসে পানি বেড়ে তলিয়ে গেছে সুন্দরবন। পটুয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ রাঙ্গাবালী উপজেলার প্রায় ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে রোববার (২৬ মে) বিকেলে আবহাওয়াবিদরা জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ আঘাত হানতে শুরু করলেও সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরের তিন থেকে চার ঘণ্টায় তাণ্ডব চালিয়ে রিমালের কেন্দ্র স্থলভাগে ওঠে আসতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ে কেন্দ্রেই থাকে প্রচণ্ড শক্তি।
রিমালের সম্ভাব্য গতিপথ ও এর আঘাত হানার সময় নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টি আজ সন্ধ্যা বা মধ্যরাত নাগাদ মোংলার কাছ দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়ার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এদিকে রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড় রিমাল নিয়ে দেওয়া ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে নতুন করে ৯ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।
এর আগে আবহাওয়া অধিদপ্তরের জারি করা ৯ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৯.৪° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৫° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
রাঙ্গাবালী উপজেলার বেড়িবাঁধ ভেঙে ২০ গ্রাম প্লাবিত
আমাদের বরিশাল প্রতিবেদক জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ রাঙ্গাবালী উপজেলার প্রায় ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরমোন্তাজ নয়ার চর এলাকায় গ্রামরক্ষা বাঁধ ভেঙে গ্রামের মধ্যে পানি ঢুকে পড়ে। এতে বউ বাজার, নয়ার চর, দক্ষিণ চরমোন্তাজ, উত্তর চরমোন্তাজ, মোল্লাগ্রাম ও চর আণ্ডাসহ প্রায় ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়।
এ ছাড়াও চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের গ্রামরক্ষা বাঁধ অতিক্রম করে পানি ঢুকে পড়ায় গরুভাঙ্গা, চরলতা ও চিনাবুনিয়াসহ আরও ১০টির মতো গ্রাম প্লাবিত হয়।
রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, পানিবন্দিদের দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।